প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের পর সোমবার (০৬ জুন) ৬১ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট করে কোনো পদের উল্লেখ না করায় এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়েছেন প্যানেল শিক্ষকরা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন) মো. আনোয়ারুল হক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘আদালতের রায়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইনগত মতামত এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে উপজেলা/থানা মেধাক্রম অনুযায়ী সদ্য জাতীয়করণকৃত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদে নিয়োগ দেয়ার অনুরোধ করা হলো। পত্র প্রাপ্তির সাত কার্য দিবসের মধ্যে নির্বাচিত প্রার্থীদের নিয়োগপত্র ইস্যু করে পদায়নকৃত বিদ্যালয়ে যোগদান নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।’
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ হাজার ৯৯৫টি রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করেন। ওইসব বেসরকারি বিদ্যালয়েই প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের নিয়োগের কথা ছিল।
বেশিরভাগ রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হওয়ায় তথ্য অধিদপ্তর মন্ত্রণালয়কে জানালে গত ২ জুন মন্ত্রণালয় জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়েই প্যানেলভুক্তদের নিয়োগের নির্দেশনা দেয়।
প্যানেল শিক্ষক ঐক্যজোটের সভাপতি রবিউল মঙ্গলবার বলেন, “প্যানেলে থাকা প্রায় ২৩ হাজার প্রার্থী এখনও নিয়োগ পাননি। শুধু শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হলে বড়জোর ৪ হাজার প্রার্থী নিয়োগ পাবেন।”
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১৫টি পদ শূন্য আছে জানিয়ে রবিউল বলেন, এই উপজেলায় নিয়োগের জন্য প্যানেলে ছিলেন ১৩৭ জন, এদের মধ্যে ৫০ জন চাকরি পেয়েছেন।
শূন্য পদের বিপরীতে নিয়োগের শর্ত জুড়ে না দিলে প্যানেল থাকা ৯০ শতাংশ প্রার্থী একবারেই যোগদান করতে পারতেন বলেও জানান তিনি।
রবিউল বলেন, “মেধাক্রম অনুযায়ী চাকরি দিলে দীর্ঘদিন ধরে যারা আন্দোলন-সংগ্রাম, হাই কোর্ট-সুপ্রিম কোর্ট করলাম আমরা কিন্তু চাকরি পাচ্ছি না। চাকরি পাচ্ছে যারা বাড়ি বসে ছিল।”
হাই কোর্টের রায়ের আলোকে প্যানেল থাকা সব প্রার্থীর চাকরি নিশ্চিতেরও দাবি জানান তিনি।
রেজিস্ট্রার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চাকরি (নিয়োগ, পদোন্নতি, শৃঙ্খলা ও কল্যাণ) নীতিমালা-২০০৯ অনুযায়ী সহকারী শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১০ সালের ২১ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরকার।
ওইসব বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ দিতে পরীক্ষার মাধ্যমে ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ৪২ হাজার ৬১১ জনের মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। এদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৫১৪ জন নিয়োগ পেয়েছেন।
২০১৩ সালে বেশিরভাগ রেজিস্ট্রার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ হলে প্যানেলে থাকা বাকিদের নিয়োগ ঝুলে যায়। এরপর আন্দোলনে নামের এসব প্রার্থীরা।