উচ্চ আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্যানেলভুক্ত প্রায় ২৮ হাজার জনকে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মেধাক্রম অনুযায়ী তাঁদের নিয়োগ দিতে গত সোমবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি নির্দেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর আদালতের কাছে প্রায় সাড়ে ১৭ হাজার শূন্য পদের হিসাব দিয়েছিল। এগুলোর সব কটিতেই প্যানেলভুক্ত প্রার্থীদের নিয়োগ দিতে হবে। কিন্তু জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা শূন্য পদের তালিকা করতে গিয়ে দেখেন, চাহিদার তুলনায় এই সংখ্যা খুবই কম। এতে মাত্র কয়েক হাজার শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা জাতীয়করণ হওয়া বিদ্যালয়ের শূন্য পদের হিসাবটি ‘ভুলভাবে’ করছেন বলে মনে করেন প্রাথমিক প্যানেল শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, সদ্য জাতীয়করণ হওয়া বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকদের বদলি করে অনেক শূন্য পদ পূরণ করা হয়েছে। আবার সরকার জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে যে পঞ্চম পদ (আগে প্রধান শিক্ষকসহ চারজন ছিলেন, এখন পাঁচজন) সৃষ্টি করেছে, সেটির হিসাব ধরা হচ্ছে না। ফলে শূন্য পদ কম দেখানো হচ্ছে। তিনি এই সমস্যা সমাধান করে সবাইকে একসঙ্গে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়োগ দিতে চাই। এ বিষয়টি আমরা পর্যালোচনা করব।’
২০১০ সালের ১১ এপ্রিল রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ ৪২ হাজার ৬১১ জনকে নিয়োগের জন্য একটি প্যানেল গঠন করা হয়। এঁদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার জনকে নিয়োগ দেয় সরকার। সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিলেও ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হলে প্যানেল থেকে নিয়োগ দেওয়া বন্ধ করে দেয় সরকার। এরপর নিয়োগবঞ্চিত ও প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা আদালতে যান। আদালত তাঁদের পক্ষে রায় দেন। সে অনুযায়ী এখন নিয়োগ-প্রক্রিয়া চলছে।