মহাশূন্যে কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠিয়ে তাতে নভোচারীদের সাময়িক থাকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে আগেই। সেই আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) গত শনিবার প্রথমবারের মতো যুক্ত করা হয়েছে বাতাসে ফোলানো একটি কক্ষ। উদ্দেশ্য, সেখানে ভাসমান হোটেল স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাই। যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক বলছেন, তাঁদের প্রচেষ্টায় এটি এক বড় অগ্রগতি।
মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা ও বিগেলো অ্যারোস্পেস নামের একটি প্রতিষ্ঠান ওই ফোলানো কক্ষটি স্পেসএক্স রকেটযোগে আইএসএসে পাঠিয়েছে। এটি সেখানে থাকবে দুই বছর। এ সময়ের মধ্যে বিজ্ঞানীরা যাচাই করবেন এটা কতটুকু নিরাপদ, মহাশূন্যের নিয়ত পরিবর্তনশীল তাপমাত্রা এবং মহাজাগতিক বিকিরণে টিকে থাকতে পারবে কি না ইত্যাদি বিষয়।
বিজ্ঞানীদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভবিষ্যতে মহাশূন্যে ভ্রমণ ও অবস্থানের প্রবণতা বাড়বে। তখন সেখানে পর্যটকদের আনাগোনাও হবে নিয়মিত। আর তাঁদের আপ্যায়নের জন্য মহাশূন্যে নিশ্চয়ই অনেক হোটেলের প্রয়োজন পড়বে। এমনকি চাঁদ ও মঙ্গলে বসতি গড়তে গেলেও চাই এ ধরনের ভাসমান কক্ষ বা হোটেল। সেই লক্ষ্যেই বিগেলো এক্সপান্ডেবল অ্যাকটিভিটি মডিউল (বিইএএম) নামের কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেছে নাসা। আইএসএসে ভাসমান কক্ষ পাঠানোর ব্যাপারটি সেই উদ্যোগের এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। নাসার প্রশাসক চার্লস বোল্ডেন বলেছেন, এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আইএসএসের চেহারাই পাল্টে যাবে। আর সেখানে তৈরি হবে বহু লোকের থাকার পরিবেশ।
আইএসএসে নাসার প্রধান বিজ্ঞানী জুলি রবিনসনের মতে, বিইএএমের সম্প্রসারিত কক্ষটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি অনুকূল স্থান হবে আইএসএস। আশা করা যায়, মহাশূন্যে মানুষের সাময়িক বসবাসের সুবিধা বাড়াতে এ উদ্যোগ সফল হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে নাসার জনসন স্পেস সেন্টারে বিইএএমের প্রকল্প ব্যবস্থাপক রাজীব দাসগুপ্ত বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি চাঁদ, মঙ্গল গ্রহ, বিভিন্ন গ্রহাণু এবং মহাশূন্যের গভীরে অন্যান্য গন্তব্যে পরিভ্রমণকারীদের জন্য এ রকম ভাসমান কক্ষগুলো বিশেষ উপযোগী হবে। আর সম্প্রসারণ করা গেলে এগুলোতে অনেক জিনিস রেখে আসা যাবে। ফলে মহাশূন্য অভিযানে প্রতিবার বিপুল পরিমাণ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বহন করার প্রয়োজন ফুরাবে। এতে রকেটে জায়গা যেমন কম লাগবে, অভিযানে অন্যান্য সুবিধাও বাড়বে।’