দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এবার রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদের জন্য প্যানেলভুক্ত প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন। আইনি লড়াইয়ে সরকার হেরে যাওয়ার পর তাঁদের নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
চাকরি দেওয়ার ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয় ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ইতিবাচক মতামত দিয়েছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার বলেন, ‘প্যালেনভুক্ত শিক্ষকদের কারণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া অনেক দিন থেকে বন্ধ হয়ে আছে। আবার প্যানেলভুক্ত কয়েকজনের নিয়োগের ব্যাপারে আদালত থেকে নির্দেশনা এসেছে। সব দিক বিবেচনায় আমরা সহকারী শিক্ষকের প্যানেলভুক্ত সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এর ফলে একদিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকট দূর হবে, অন্যদিকে মামলার জটও কমবে।’ এর আগে ২০১০ সালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। পরের বছর অনুষ্ঠিত লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয়। ৪২ হাজার ৬১১ জনের প্যানেল তৈরি করে সরকার উত্তীর্ণদের পাঁচ বছরের মধ্যে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলে।
প্রথম ধাপে ১৪ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ২০১২ সালের প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়, উপজেলাভিত্তিক নয়, ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগ হবে। ২০১৩ সালে সরকার দেশের সব রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের ঘোষণা দেয়। ফলে প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগ লাভ থেকে বঞ্চিত হন। এরপর সরকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জন্য নতুন করে নিয়োগ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর প্যানেলভুক্ত শিক্ষকরা আদালতে চ্যালেঞ্জ করলে তা বন্ধ হয়ে যায়। এদিকে প্যানেলভুক্তদের মধ্য থেকে নওগাঁ জেলার ১০ জন নিয়োগপ্রত্যাশী ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ এবং তাঁদের নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৪ সালে হাইকোর্ট এক রায়ে রিট আবেদনকারী ১০ জনকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেন এবং ইউনিয়নভিত্তিক নিয়োগের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রথমে আপিল এবং আপিলে হেরে যাওয়ার পর রিভিউ আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রিভিউ আবেদনেও হেরে যাওয়ার পর গত ২৪ মার্চ ওই ১০ জনকে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
এদের নিয়োগের দৃষ্টান্ত ধরে অন্যরাও আদালতের আশ্রয় নিলে নিয়োগ পেয়ে যাবেন এই আশঙ্কা থেকে সরকার প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের সবাইকে নিয়োগ দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে। এ ব্যাপারে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও সরকারের প্রধান আইন কর্মকর্তার মতামত চাওয়া হলে সব জায়গা থেকে চাকরি দিয়ে দেওয়ার পক্ষে মতামত আসে। এরই মধ্যে নিয়োগবঞ্চিত প্রায় ১০ হাজার প্যানেলভুক্ত শিক্ষক হাইকোর্টে প্রায় পাঁচ’শটির মতো রিট আবেদন করেছেন বলে জানা গেছে। প্যানেলভুক্ত ২৮ হাজার শিক্ষকের মধ্য থেকে চার হাজারের মতো প্রার্থী এরই মধ্যে ভিন্ন চাকরিতে প্রবেশ করেছেন বলে মন্ত্রণালয় ধারণা করছে।
Updates :
Error Loading Feed!
Next
« Prev Post
« Prev Post
Previous
Next Post »
Next Post »
































Subscribe to:
Post Comments (Atom)