মানুষের বিশ্বস্ত সহচর হিসেবে কুকুরের খ্যাতি অনেক। প্রখর ঘ্রাণশক্তি এদের। তাই দিয়ে খুঁজে বের করতে পারে অনেক কিছু। তালিম দিলে এরা নাকি মানুষের ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো রোগও শনাক্ত করার ক্ষমতা রাখে! সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমনই আলোচনা চলছে।
সাত বছর বয়সী লুক নুটালের টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস হয়েছে। আর ব্যাপারটা প্রথম ধরেছে ওই পরিবারের পোষা কুকুর জেডি। লুকের মা ডরি নুটাল বলেন, ডায়াবেটিস নির্ণয়ের যন্ত্র ধরতে পারেনি তাঁর ছেলের ওই অসুখ।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ওই বিস্ময়কর গল্প ফেসবুকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। কীভাবে কুকুরেরা মানুষের রোগনির্ণয়ে তাদের ঘ্রাণশক্তি ব্যবহার করতে পারে—চলছে সেই আলোচনা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুকুরের নাক অবিশ্বাস্য রকমের সংবেদনশীল। মাদকদ্রব্য, অস্ত্রশস্ত্র, বোমা, অন্য প্রাণীর মলমূত্র ইত্যাদি হরেক রকমের গন্ধ এরা চিনতে পারে।
একাধিক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, মানুষের বন্ধু হিসেবে খ্যাত প্রাণীটি নানা রকমের ক্যানসার ও টিউমার শনাক্ত করতে পারে। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিচিকিৎসা গবেষক সিন্ডি ওটো বলেন, কুকুর ঠিক কিসের গন্ধ শোঁকে, তা স্পষ্ট নয়। তবে এরা ডায়াবেটিস রোগীর শরীরের জৈব রাসায়নিক বিভিন্ন উপাদান হয়তো চিনতে পারে। তবে এ রকম সুনির্দিষ্ট কোনো উপাদান সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হতে পারেননি। রোগনির্ণয়ের জন্য কুকুরকে কিছু প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় দেখা যায়, ডায়াবেটিস শনাক্তকারী কুকুরেরা তাদের ঘ্রাণশক্তি দিয়ে মানুষের রক্তের চিনির মাত্রার তারতম্য টের পায়। আর পরীক্ষাগারে রক্তের নমুনা শুঁকে তারা একাধিক ক্যানসার চিহ্নিত করতে পারে।
হাওয়াইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্স ডগস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের গবেষক মরিন মরার সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, কুকুরেরা মানুষের প্রস্রাবের নমুনায় বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি শতভাগ নির্ভুল শনাক্ত করতে পেরেছে। তাই কুকুরকে আরও প্রশিক্ষণ দিলে রোগনির্ণয়ের কাজে বড় রকমের সাফল্য পাওয়া যাবে—এমন আশা তো করাই যায়।