— শফিক মোরশেদ —
.
# নারীত্ব, কুমারীত্ব ও সতীত্বে কেন হাত দেওয়া যায় না! কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নিন।
.
শব্দের শেষে ‘ত্ব’ প্রত্যয় যুক্ত হলে ঈ-কার ই-কার হয়ে যায়।
যেমন:
দায়ী >দায়িত্ব,
স্থায়ী >স্থায়িত্ব,
মন্ত্রী >মন্ত্রিত্ব
.
কিন্তু
নারী >নারীত্ব
সতী >সতীত্ব
কুমারী > কুমারীত্ব
এবার ভেবে দেখুন, আসলেই আমাদের বাংলাভাষা “নারীত্ব ও সতীত্ব”র কত মূল্য দিয়েছে!
.
#শ্বশুরের কেন নিচে থাকে, শাশুড়ির কেন পাশে থাকে?
.
শ্বশুর এবং শাশুড়ি ; বানান দুটি লক্ষ্য করুন।
.
শ্বশুর বানানে ‘শ’ এর নিচে ‘ব’ যুক্ত আছে। কিন্তু শাশুড়ি বানানে তা নেই; তবে শ এর পাশে আ-কার আছে। অর্থাৎ শ্বশুর এর নিচে ‘ব’, আর শাশুড়ির পাশে আ-কার আছে। সোজাকথায়, যার যেখানে যা যা থাকা উচিত আরকি tongue emoticon
শ্বশুর বানানের শেষে ‘র’ আছে কিন্তু শাশুড়ি বানানে শেষে ‘ড়’ আছে।
.
# বঁধু= বন্ধু
বধূ = বউ।
.
কেউ কেউ বলে থাকেন যে বন্ধুর দাম বউয়ের চেয়েও বেশি। এজন্য বন্ধুর কপালে বিশ্বাসের তিলক পড়িয়ে দেন। তাই বন্ধু অর্থে ‘বঁধু’ বানান ব্যবহৃত হয়।
.
কিন্তু বউয়ের পোড়া কপাল, কপালে কিছুই নাই।
বাংলা বানান – পর্ব – ৪
শফিক মোরশেদ
——————–
বিসর্গ চিহ্নের কারিশমা দেখুন:
মনে করি, কোন এক সরকারি গেজেটে বলা হলোঃ
“নির্বাচনের সময় সকল পুলিশ অফিসার ও অধঃস্তন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবেন। যদি কোন পুলিশ কিংবা অধঃস্তন কর্মকর্তা এই আইন অমান্য করে তবে তাকে বদলি করা হবে”।
খেয়াল করুন ‘অধঃস্তন কর্মকর্তা’ শব্দটি। ‘নিন্মপদস্থ’ কর্মকর্তা বুঝাতে ‘অধঃস্তন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
কিন্তু অধঃ= নিচ এবং স্তন=স্তন অর্থাৎ অধঃস্তন= নিচের স্তন।
তাহলে উপরের গেজেটটি আবার পড়া যাক…
“নির্বাচনের সময় সকল পুলিশ অফিসার ও নিচের স্তন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবেন। যদি কোন পুলিশ কিংবা নিচের স্তন কর্মকর্তা এই আইন অমান্য করে তবে তাকে বদলি করা হবে”।
কী সাংঘাতিক কথা! নিচের স্তন নাকি বদল করে দেবে !! এটাও সম্ভব !!!
তাহলে আসুন, আসল ঘটনা জেনে নেই:
অধস্তন= নিন্মপদস্থ (অধঃ+তন= অধস্তন)
অধঃস্তন= নিচের স্তন (অধঃ+স্তন= অধঃস্তন)
এবার গেজেটটি আবার পড়া যাক:
“নির্বাচনের সময় সকল পুলিশ অফিসার ও অধস্তন কর্মকর্তা নির্বাচন কমিশনের অধীনে কাজ করবেন। যদি কোন পুলিশ কিংবা অধস্তন কর্মকর্তা এই আইন অমান্য করে তবে তাকে বদলি করা হবে”।
বানানে বিসর্গ চিহ্ন কী পরিমাণ গুরুত্বপূর্ণ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না