মঙ্গলবার সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা বলেন।
নিয়োগবঞ্চিত এসব স্কুলের প্যানেলভুক্ত প্রার্থীরা মঙ্গলবার মিরপুরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে একইস্থানে একই দাবিতে আরও তিনদিন কর্মসূচি পালন করেন তারা।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে সারাদেশ থেকে আসা কয়েকশ’ প্রার্থী অংশ নেন। মানববন্ধন অবশ্য একপর্যায়ে বিক্ষোভে পরিণত হয়। ভুক্তভোগীরা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের প্রধান ফটক দখল করেন। তারা প্রায় দেড় ঘণ্টা গেট বন্ধ করে রাখেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাদের তুলে দেয়। এরপর তারা জাতীয় সংসদে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও গণশিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেন।
এসময় প্রার্থীরা অভিযোগ করেন, এ নিয়োগ নিয়ে অধিদফতর একেক সময় একেক আদেশ জারি করছে। এ কারণে মাঠপর্যায়ের প্রার্থীরা বিভ্রান্ত। যে কারণে অনেক জেলা নির্দেশনা সত্ত্বেও নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করেনি। এমন জেলার মধ্যে পটুয়াখালী, নওগাঁ, ঝালকাঠি, চাঁদপুর অন্যতম।
তাদের আরও অভিযোগ, কোনো কোনো জেলায় নিয়োগবাণিজ্য হচ্ছে। এমন অঞ্চলের মধ্যে পিরোজপুরের নাজিপুরে একটি। ওই জেলায় রাশিদা (মেধাক্রম-৮২) নামে একজন প্রার্থী ২০১৩ সালে যোগদান করেননি। তিনি যোগদান করবেন না মর্মে লিখিত দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ৮৭ মেধাক্রমের প্রার্থী তখন যোগদান করেন। আর ৮২ মেধাক্রমের প্রার্থী কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি নেন। কিন্তু এই একই প্রার্থীকে এখন দ্বিতীয়বার নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে।
সদর উপজেলায় কৃষ্ণা রায় নামে একজন ২০১৩ সালেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন। চাকরিরত এ প্রার্থীকে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, নাজিরপুরে মৃত্যু প্রার্থীর নামেও নিয়োগপত্র ইস্যু করা হয়েছে বলে বিক্ষোভ সমাবেশে অভিযোগ করা হয়। তবে কোনো কোনো জেলায় সঠিকভাবে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে বক্তারা জানান। তারা বলেন, রাজশাহী, নাটোর, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও জেলা শুধু মামলায় জয়ীদের নিয়োগ দিয়েছে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত তিন বছরে যারা আন্দোলনে ছিল না, আজকে তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সবাই যাতে নিয়োগ না পায়, সেজন্য বিভিন্ন জেলায় শূন্যপদ গোপন করা হচ্ছে। আবার অনেক জেলায় পুরনো স্কুলের শিক্ষকদের নতুন সরকারি স্কুলে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা পুরনো শিক্ষকদের পুরনো স্কুলে ফিরিয়ে নেয়াসহ মোট ৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, আদালতের নির্দেশ এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সদ্য জাতীয়করণকৃত সাবেক রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম পদসহ সব শূন্যপদে প্যানেল ভুক্তদের নিয়োগের নির্দেশ দেয়।
২০১০ সালের বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক ৪২ হাজার ৬১১ জনের একটি প্যানেল করা হয়েছিল। ওই প্যানেল ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারির আগে প্রায় ১৪ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। বাকি ২৮ হাজার প্রার্থীর নিয়োগ প্রক্রিয়া ঝুলে গিয়েছিল, যারা মামলায় জয়লাভ করে। এদেরই নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া এখন চলছে।